Author: Sutapa Singha Mahapatra
DOI Link: https://doi.org/10.70798/Bijmrd/03010033
Abstract(সারসংক্ষেপ): বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘রজনী’ উপন্যাসটি বাংলা কথাসাহিত্যে এক নতুন ধারার সূচনা করে, যেখানে কাহিনীর চেয়ে মনস্তত্ত্ব বিশ্লেষণকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। সম্ভবত এটিই বাংলা সাহিত্যে প্রথম কোনো প্রতিবন্ধী চরিত্রকে কেন্দ্র করে রচিত উপন্যাস। ‘রজনী’ চরিত্রটি জন্ম থেকেই অন্ধ এবং তাকে তার পালক পিতা-মাতা দারিদ্র্য সত্ত্বেও পরম স্নেহে লালন-পালন করেন। অন্ধত্বের কারণে তার বিবাহ না হলেও, সে ছিল পরমাসুন্দরী। রজনীর জীবনে শব্দ, গন্ধ ও স্পর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই স্পর্শ ও শ্রবণানুভূতিই তাকে শচীন্দ্রনাথের প্রতি আকৃষ্ট করে। এই প্রণয় অনুভূতির স্ফুরণে চক্ষুমান বা জন্মান্ধতার কোনো বিশেষ ভূমিকা নেই, বরং চক্ষুহীনা নারী তার অন্তরের শক্তিতে মানব-অন্তরের রূপ বেশি উপলব্ধি করতে পারে। বঙ্কিমচন্দ্র এই চরিত্রটি সৃষ্টিতে লর্ড লিটন প্রণীত ‘The Last Days of Pompeii’ উপন্যাসের অন্ধ ফুলওয়ালী ‘নিদিয়া’ চরিত্র দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তবে নিদিয়া ও রজনী চরিত্রের মধ্যে প্রকৃতিগত পার্থক্যও লক্ষণীয়। যেখানে নিদিয়ার প্রেম ছিল বেগবতী, সেখানে রজনীর প্রেম শান্ত ও নিস্তরঙ্গ এবং তার নিকট কর্তব্যের স্থান ছিল অন্য সবকিছুর ঊর্ধ্বে। উপন্যাসের শেষে রজনী দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়, বিপুল সম্পত্তির উত্তরাধিকারিণী হয় এবং শচীন্দ্রনাথের সাথে তার বিবাহ সম্পন্ন হয়, যার মাধ্যমে বঙ্কিমচন্দ্র কর্মফলবাদ ও নিয়তিবাদের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। ‘রজনী’ নামকরণটি অন্ধ যুবতীর চির-অন্ধকারময় জগতের ইঙ্গিত বহন করে, যা বঙ্কিমচন্দ্রের দৃষ্টিভঙ্গীর মুন্সিয়ানার পরিচয়।
Keywords(মূল শব্দ): বঙ্কিমচন্দ্র, রজনী, নিদিয়া, প্রতিবন্ধী চরিত্র, মনস্তত্ত্ব, পাশ্চাত্যনুসরণ।
Page No: 268-273
