কৌতুকের মোড়কে নবনীতা দেবসেনের ছোটগল্পে নারীসমাজের গভীর জীবনদর্শন

Author: চন্দ্রিমা কর্মকার এবং অধ্যাপক (ড.) সমীর প্রসাদ

DOI Link: https://doi.org/10.70798/Bijmrd/02100014

সারাংশ: সময়কাল হিসেবে আদিমকালে মাতৃতান্ত্রিক সমাজই বিদ্যমান ছিল। গার্হস্থ্য সকল সম্পত্তির অধিকারিণীও ছিল মাতৃসমাজ। তারপর এল সামন্ততান্ত্রিক সমাজ, যার কেন্দ্রবিন্দু ছিল পুরুষতান্ত্রিক সমাজ। নারীদের আধিপত্য অগ্রাহ্য করে ধীরে ধীরে শুরু হল পুরুষ শাসিত সমাজ। নারীরা তাদের অধিকার, সম্মান এবং ঐতিহ্য হারিয়ে পদপৃষ্ঠ হল পুরুষ শাসিত সমাজের কারাগারে। নারী হয়ে উঠল সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র, পুরুষদের আনন্দ উৎসবের আয়োজন। নবনীতা দেবসেন তাঁর জীবনে অসংখ্য লেখনীর মাধ্যমে সেই পরিক্রমার কথাই সুচারু করে তুলে ধরেছেন। তাতে নেই কোনো ঔদ্ধত্যপূর্ণ নেতিবাচক মনোভাব কিংবা উগ্রতা। রয়েছে নিটোল, সরল, সুন্দর মেজাজে সমাজে নারীদের নিজ সম্মানে সহবস্থানের কথা। তাতে একদিকে যেমন রয়েছে সমাজের অপ্রিয় বাস্তব সত্য, তেমনই তার অভ্যন্তরে পরিবেশিত হয়েছে অনবদ্য হাস্যরস। মুক্তির তরল আরাম নিয়ে তাঁর লেখনিগুলো যেন স্বর্গীয় হাসি আর উজ্জ্বলতা প্রকাশ করেছে। সৃষ্টির এই স্বাভাবিক সাম্যতার কথা মাথায় রেখে তিনি সমাজের বিভেদ নীতির বিরোধিতা করেছেন। নারী এবং পুরুষ যে স্বাভাবিক মানব বিভাজন সেই কথা তিনি তর্জনী নির্দেশে বুঝিয়েছেন। নারী কারুর অধিকারের সামগ্রী নয়, বরং পুরুষের সহধর্মিণী, সহযোগী হিসেবে নিজগুণে প্রতিষ্ঠিত। তিনি দেখাতে চেয়েছেন পুরুষদের মতোই নারীদেরও সামর্থ্য আছে অসাধ্য সাধনের। প্রকৃত যোদ্ধা যুদ্ধের সাহস রাখে, সেই যুদ্ধে তার জয় বা পরাজয়ের ফল নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকে না। তেমনি ব্যর্থতা আসতেই পারে তবু নারীও পারে দুঃসাধ্য সাধনে ব্রতী। আর সেই গম্ভীরতার মাঝে তিনি সংযোজন করেছেন হাস্যরস, যা তাঁর গল্পগুলোকে আরও সংবেদনশীল এবং উপভোগ্য করে তুলেছে।

Keywords: কৌতুকরস, নারীবাদ, জীবনদর্শন, হাস্যরস, প্রতিবাদ, বিদ্রোহ।

Page No: 116-121